ই নামজারি যাচাই | খারিজ খতিয়ান চেক করার নিয়ম

আপনার জমি কার নামে খারিজ করা তা জানতে বা অনলাইনে ই নামজারি আবেদন করে থাকলে জেনে নিতে পারেন ই নামজারি যাচাই বা খারিজ খতিয়ান চেক করার নিয়ম।

মালিকানা অধিকার ভোগ করতে জমি খারিজ বা নামজারি করা গুরুত্বপূর্ণ। জমি ক্রয়-বিক্রয় বা ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়ার পর নতুন মালিক নিজের নামে নামজারি করতে হয়। অন্যথায়, পূর্বের মালিকের নামেই তা রেকর্ড থাকে। তাই মালিকানা নিরাপত্তায় অনলাইনে খারিজ খতিয়ান চেক করে নিন।

খারিজ খতিয়ান কি?

খারিজ খতিয়ান বলতে জমির নতুন মালিকের নামে খতিয়ান নিবন্ধন করাকে বুঝায়। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০ এর ধারা ১৪৩ অনুসারে খারিজ খতিয়ানকে সংজ্ঞায়িত করা যায়। যথা-

কোন ব্যক্তি জমির মালিকানা পাওয়ার পর, পূর্ব মালিকের নাম পরিবর্তন করে নতুন মালিকের নাম সংশ্লিষ্ট খতিয়ান অন্তর্ভুক্ত, নতুন খতিয়ান খোলাকেই খারিজ/ নামজারি বা মিউটেশন বলে। এক্ষেত্রে নতুন মালিক নিজ নামে নতুন খতিয়ান খোলবে ও রেকর্ড হালনাগাদ করবে। বর্তমানে খুব সহজেই জমির খারিজ করা যায়,

খারিজ খতিয়ান চেক করবো কিভাবে

ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ E-porcha ওয়েবসাইটে ভিজিট করে, নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান পেজে যান। তারপর, আপনার জমির বিভাগ, জেলা, উপজেলা, মৌজা ও খতিয়ান নং এর তথ্য দিলে নামজারি বা খারিজ খতিয়ান যাচাই  করতে পারবেন।

ইউনিয়ন পরিষদ বা উপজেলা ভূমি অফিস থেকে নামজারি খতিয়ান চেক করতে ফি দিতে হয়। তাই বিনা খরচে অনলাইনে ঘরে বসেই ই-পর্চা ওয়েবসাইট থেকে নিজের খতিয়ান চেক করুন।

খারিজ খতিয়ান চেক করতে কি কি লাগে

খারিজ খতিয়ান যাচাই করতে দরকার-

  • জমির অবস্থানের ঠিকানা;
  • খতিয়ান নম্বর/ খতিয়ানের মালিকের নাম।

এ দুটি তথ্য থাকলেই হাতে থাকা মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে খারিজ খতিয়ান অনুসন্ধান করা যায়।

নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান করার পদ্ধতি

খারিজ/ নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান করার জন্য প্রথমেই ভিজিট করুন- https://eporcha.gov.bd/ এই লিংকে। এটি ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মার্ট ভূমি রেকর্ড ও ম্যাপ সেবার ওয়েবসাইট।

খারিজ খতিয়ান চেক

লিংক ওপেন করার পর ভূমি মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত ই-পর্চা ওয়েবসাইটের মূল ইন্টারফেসে প্রবেশ করবেন। এবার খারিজ খতিয়ান অনুসন্ধানের জন্য নিচের ছবিসহ দেখানো ধাপগুলো অনুসরণ করুন-

ধাপ ১: নামজারি খতিয়ান অনুসন্ধান

ই-পর্চা ওয়েবসাইটের এই পেজে সকল সেবার সার্ভিস মেন্যু দেখতে পাবেন। খারিজ/ নামজারি খতিয়ান বা মিউটেশন চেক করার জন্য এখান থেকে নামজারি খতিয়ান অপশনে যান।

খতিয়ান বের করার নিয়ম

ধাপ ২: খতিয়ানের অবস্থান বা ঠিকানা

খারিজ খতিয়ান চেক করার জন্য অনুসন্ধান বক্সে খতিয়ানের বিভাগ সিলেক্ট করুন। তারপর ধারাবাহিকভাবে জেলা ও উপজেলা আসলে তা সিলেক্ট করুন।

ধাপ ৩: মৌজা নির্বাচন

দেশের ভূমি সংক্রান্ত ম্যাপ পরিচালনার জন্যই মৌজা গঠিত। ই-পর্চা ওয়েবসাইটে কিছু কিছু জেলা ও উপজেলার তথ্য দেওয়ার পর মৌজাসমূহের তালিকা দেখা যায়। তবে মৌজা না দেখালে আপনার মৌজার নাম ও মৌজা নম্বর লিখে অনুসন্ধান করুন।

ধাপ ৪: খতিয়ানের তালিকা

মৌজা তথ্য দেওয়ার পর সেই মৌজার অধীনে থাকা সকল খতিয়ানের তালিকা দেখতে পাবেন। এখান থেকে আপনার খতিয়ানটি খুঁজে বের করুন। খতিয়ান খুঁজে না পেলে ‘খতিয়ান নং’ অনুসন্ধান ঘরের অপশনে আপনার নামজারি খতিয়ান নম্বরটি লিখে ‘খুঁজুন’ বাটনে ক্লিক করুন।

ব্যাস, এভাবে আপনার জমির নামজারি  বা খারিজ খতিয়ান যাচাই করতে পারবেন।

ই নামজারি যাচাই – খারিজ আবেদন যাচাই

বর্তমানে অনলাইনে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে জমি খারিজ করা যায়। অনলাইনে আবেদন করার পর নামজারি খতিয়ান আবেদনের অবস্থা জানতে পারবেন।

সেজন্য প্রথমে এই লিংকে ভিজিট করুন- https://mutation.land.gov.bd/search-application। এবার, অনুসন্ধান ফরমে-

খারিজ আবেদন যাচাই
  • জমির অবস্থানের ঠিকানা; যেমন বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইত্যাদি
  • আবেদন আই.ডি;
  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর;
  • সর্বশেষ, গাণিতিক ফলাফল লিখুন।

তারপর ‘খুঁজুন’ বাটনে ক্লিক করলে নামজারি/ খারিজ খতিয়ান চেক করে আবেদনের বর্তমান অবস্থা জানতে পারবেন।

FAQ’s

অনলাইনে ই নামজারি বা খারিজ আবেদন করবো কিভাবে?

অনলাইনে জমি খারিজ করার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের https://mutation.land.gov.bd/ এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। তারপর, নামজারি আবেদন অপশনে ক্লিক করলে একটি আবেদনপত্র পাবেন। জমি খারিজের সকল তথ্য দিয়ে অনলাইনে আবেদনপত্র সাবমিট করুন।

জমি খারিজ না করলে কি হয়?

জমি খারিজ/ নামজারি করা ছাড়া সম্পূর্ণ মালিকানা অধিকার পাওয়া যায় না। ফলে অনলাইন ভূমি রেকর্ডে জমি পূর্বের মালিকের নামেই তালিকাভুক্ত থাকে। জমির পূর্বের মালিক দ্বিতীয়বার সেই জমি বিক্রয় করে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

জমি খারিজ করতে কত টাকা লাগে?

জমি খারিজ করতে অনলাইনে ই নামজারি আবেদনের সময়- কোর্ট ফি ২০ টাকা ও নোটিশ জারি ফি ৫০ টাকা দিতে হয়। আবেদন অনুমোদিত হলে ভূমি রেকর্ড সংশোধন ফি- ১০০০ টাকা এবং খতিয়ান সরবরাহ ফি ১০০ টাকা অনলাইনে জমা দিতে হয়।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *