বাংলাদেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম

বাংলাদেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই জানতে চেয়েছেন।  তাই বাংলাদেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠানোর সহজ উপায় সম্পর্কে জানাবো।  কিভাবে খুব সহজেই এই দেশ থেকে কোন দরকারে পড়লে বিদেশে টাকা পাঠানো যায় এটা অনেকেই জানেনা।

আমরা সচরাচর বিদেশ থেকে দেশে টাকা আনার নিয়ম সম্পর্কে জানি, না বিদেশ থেকে টাকা দেশে আসার পদ্ধতি সম্পর্কে দেখেছি। এর কারণ হলো বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ বিদেশে থাকে জীবিকা নির্বাহ করে, আর তাদের কষ্টার্জিত রেমিটেন্স পাঠিয়ে দেয় এই দেশে বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে। আমরা সাধারণত এগুলো দেখে থাকি।

বাংলাদেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম

অনেকের বাংলাদেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠানোর প্রয়োজন হয়নি বলে  বিদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে  আমাদের অনেকেরই ধারণা নেই।  বর্তমান সময়ে দেখা যায় অধিকাংশ মানুষ বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার জন্য যায়। আর তাদের যখন চিকিৎসার জন্য টাকার প্রয়োজন হয় তখন  এই দেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠানোর  দরকার পড়ে। কিন্তু তখন এই কিভাবে দেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠানোর যায় তা অনেকে জানেনা।

বিদেশে টাকা পাঠানো  যায় কিনা? 

বিদেশে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে সব দেশের এই সীমাবদ্ধতা রয়েছে এবং এটি বলতে গেলে একেবারে অসম্ভব।  কারণ আপনি বিদেশ থেকে শুধু টাকা নিয়ে আসতে পারবেন কিন্তু  লিগাল প্রক্রিয়ায় বিদেশে টাকা পাঠাতে পারবেন না এটি সম্পূর্ণ অবৈধ। কারণ বিদেশের টাকা পাঠানো টাকা পাচারের শামিল।  যেটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে দুর্বল করে তোলে। তবে বৈধভাবে বিদেশে টাকা পাঠানোর একটি পদ্ধতি রয়েছে সেটি হল কেউ ক্রেডিট কার্ডে ডলার এনডোর্স করে যায় অথবা পড়াশোনা করে বিদেশে কেউ এমন থাকে তাহলে সে খরচ  চালানোর জন্য বিদেশে টাকা পাঠাতে পারবেন। 

টাকা পাঠানোর পদ্ধতি আছে এরমধ্যে বিদেশে টাকা পাঠানোর সবচাইতে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি হলো ব্যাংকিং তবে  বিদেশে টাকা পাঠানো সম্পূর্ণ অবৈধ কিন্তু কয়েকটি ক্ষেত্রে বিদেশে টাকা পাঠানো যায় সেটি নিয়ে আলোচনা করব আস্তে আস্তে। সারা বিশ্বে প্রায় পঁচিশ হাজারের মতো ব্যাংক রয়েছে। এরমধ্যে বাংলাদেশের প্রায় 50 +  ব্যাংক রয়েছে সরকারি এবং বেসরকারি। যেসব ব্যাংক গুলো বিদেশ থেকে টাকা আনার সুবিধা প্রদান করে।অনেকেই মনে করেন যে ওয়েস্টার্ণ ইউনিয়ন এর মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাঠানো যায় কিন্তু সত্য বলতে আপনি শুধু ওয়েস্টার্ণ ইউনিয়ন এর মাধ্যমে টাকা রিসিভ করতে পারবেন কিন্তু টাকা সেন্ড করতে পারবেন না। তবে আপনি যদি কোন বিজনেসম্যান হন তাহলে সেটি ভিন্ন কথা কিন্তু ইন্ডিভিজুয়াল কোন ব্যক্তির জন্য বিদেশে টাকা পাঠানোর সম্পূর্ণ অবৈধ। 

তবে অজানা মনে অনেক প্রশ্ন থাকে যে অনেকের ছেলে মেয়ে বিদেশে পড়াশোনা করে, এবং তাদের তো পড়াশোনার খরচ পাঠাতে হবে।  এখন তাহলে প্রশ্ন আসে আদৌ দেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠানো যায় কিনা? আর পাঠানো গেলেও কিভাবে টাকা পাঠানো যায়।  দেখেন  বিশ্ব এখন ডিজিটাল। তো  ডিজিটাল সেক্টর অসম্ভব বলতে মানুষের  কাছে  কিছুই নেই। আগে চিঠিতে করে মানুষ একজনের কাছ থেকে আরেকজনের বার্তা পাঠাতো মনের ভাব প্রকাশ করত।  আর মোবাইল ফোন আবিষ্কার হওয়ার পরে সেটি সহজলভ্যতা প্রকাশ পেয়েছে। 

তেমনি টাকা আদান প্রদান করার জন্য ব্যাংকিং সেক্টর আবিষ্কার হয়েছে। তো আপনার কি মনে হয় ব্যাংকিং থাকতেই আপনি টাকা পাঠাতে পারবেন না দেশ থেকে বিদেশে? সেটা কিভাবে হয়? বিদেশ থেকে যেভাবে আপনারা রেমিটেন্স নিয়ে আসেন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তেমনি ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠানো ও  সম্ভব।  তবে সীমাবদ্ধ থাকে যেমন আমাদের দেশে বিদেশে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে অনেকটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেটা উপরে বলেছি বলতে গেলে একেবারেই অসম্ভব।  তবে লিগাল প্রসিডিউর ব্যবহার করে টাকা পাঠানো যাবে ।তো চলুন জানেনা টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা গুলো কি কি

আরো দেখুনঃ বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম

বাংলাদেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম ও সীমাবদ্ধতা

নতুন একটি নিয়ম চালু হয়েছো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। যার কারনে টাকা পাঠানো ও একটু সহয হয়ে গিয়েছো, সেটা হলো যারা প্রবাসী আছেন তারা রেমিটেন্স কার্ড তৈরি করে সেই কার্ডের মাধমে টাকা পাঠাতে পারবেন৷ এজন্য ব্যাংকে গিয়ে একটি ফরম পুরন করে টাকা জমা দিলেই হবে।

তাছাড়া সহজ ভাবে যদি আপনি জেনারেল একজন পাবলিক হন,  অর্থাৎ পাসপোর্টধারী ব্যক্তি হন, আপনি যদি বিদেশে ঘোরাফেরার জন্য বা অন্য কোন কারণে টাকা পাঠাতে চান তাহলে অবশ্যই দেশে বসে আপনাকে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করতে হবে এবং সেই ব্যাংকে আপনাকে পাসপোর্ট  এন্ডোর্স  করার মাধ্যমে ডেবিট অথবা ক্রেডিট কার্ড নিতে হবে যেটাতে দুটি  কারেন্সি থাকবে। আর ডলার এনডোর্স করার ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

আপনি যদি সার্কভুক্ত  দেশের মধ্যে যান সে ক্ষেত্রে এক বছরে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার ডলার এন্ডোর্স করতে পারবেন । আর যদি  সার্কভুক্ত দেশের বাইরে যেতে চান তাহলে  এক বছরে সর্বোচ্চ 7 হাজার ডলার এনডোর্স করতে পারবেন। আর যখন আপনি ডলার এনডোর্স করে বিদেশে প্রবেশ করবেন তখন এদেশ থেকে যে কেউ আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমাক করলেই আপনার  ডলারে সেটি হাতে  ঢাকা ক্রেডিট কার্ডে সেটি অটোমেটিক  যুক্ত হয়ে যাবে।

দালালের মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাঠানো যায় কিনা?

দেখুন আমি কখনই আপনাকে বলব না যে দালালের মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাঠানোর কারণ দালাল জিনিসটাই খুব ভয়ংকর।  তবে আপনি যদি খুব বিপদে পড়েন আর যদি আপনাকে পরিচিত থাকে যে এমন দালালি করে তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনার জন্য ভালো। তবে অপরিচিত কাউকে ধরে আপনি কখনো টাকা-পয়সার লেনদেন করবেন না এক্ষেত্রে আপনি বিপদে পড়তে পারেন। তো আপনারা অনেকেই দেখে থাকবেন যে বিদেশে অনেকেই আটকা পড়ে থাকে ভিসার জন্য টাকা থাকে না হাতে, তখন দেশ থেকেই তাদের টাকা পাঠাতে হয়। আসলে তারা টাকা কিভাবে পাঠায়? 

দালাল বা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর অভিনব পদ্ধতি সেটা সম্পর্কে আমি আলোচনা করব। দুটি পক্ষ থাকে যার একটি পক্ষ দেশে থাকে এবং আরেকটি পক্ষ বিদেশে থাকে। তারা একই দলের লোক। উদাহরণস্বরূপ  যখন কেউ বিদেশ থেকে ডলার  নিয়ে আসে সেই ডলার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এক্সচেঞ্জ করে টাকা তে রূপান্তর করে ঠিক তেমনি আপনি এই দেশের দালালকে বাংলাদেশী টাকা দিলে সে ওই  টাকা বিদেশি দালালের মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রায় পরিণত করে দিবে বিদেশে থাকা দালালের মাধ্যমে। যেমনটা আমরা অনেক ক্ষেত্রে দেখতে পাই যে বিকাশের মাধ্যমে বিদেশ থেকে টাকা পাঠায়,  আসলে বিকাশের মাধ্যমে সরাসরি টাকা পাঠানোর কোন পদ্ধতি নেই তবে তৃতীয় পক্ষ ব্যবহার করে বিদেশ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠায়। তবে আমি সবসময় আপনাদেরকে সাজেস্ট করবো দাড়াল এড়িয়ে চলার।

শিক্ষার্থীদের জন্য যেভাবে বিদেশে টাকা পাঠাবেন

আগেই বলেছি বিদেশে টাকা পাঠানোর একমাত্র নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি হলো ব্যাংকিং। যারা বিদেশে পড়াশুনা করে তাদের পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য যখন দেশের থেকে টাকা পাঠানোর প্রয়োজন হয় তখন একটাই  উপায় আসে।  সেটা হল যারা শিক্ষার্থী তারা  যদি এই দেশ থেকে যে কোন ব্যাংকে অর্থাৎ যেসব ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট সাপোর্ট করে সেসব ব্যাংকে একটি  স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্ট  হিসাব খুলে তাহলে সেই স্টুডেন্ট একাউন্ট এর মাধ্যমে টাকা পাঠানো যাবে।  এক্ষেত্রে আপনার বিষয়টি অবশ্যই স্টুডেন্ট ভিসা হতে হবে । এ ছাড়া অন্য কোন আবে পাঠানোর উপায় নেই। 

ভারতে টাকা পাঠানোর নিয়ম কি?

বাংলাদেশ থেকে অনেকে আছেন যারা ভারতে বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন রকমের ভাষা নিয়ে প্রবেশ করেন,  কেউ ওয়ার্কার এর বিষয়, কেউ চিকিৎসা নেয়ার জন্য ভারতীয় যায় অথবা কেউ স্টুডেন্ট ভিসায় ভারতে যায়। তো ভারতে যাওয়ার পরে চিকিৎসা খরচ বা অন্যান্য খরচ যদি আপনার হাতে না থাকে তাহলে  এই সময়ে কিভাবে আপনি এই দেশ থেকে টাকা নেবেন সেটি আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে। যেমনি এ দেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠানোর সম্পূর্ণ অবৈধ এবং কোন পদ্ধতি নিয়ে তিনি বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়া টাকা পাঠানোর কোন সিস্টেম বা পদ্ধতি নেই।  যেমন উপরে বলেছি  ইল্লিগ্যাল’ কিছু  পদ্ধতিকে লিগ্যাল ভাবে চালিয়ে আপনি ভারতে বা বিদেশে টাকা নিতে পারবেন। আপনার যদি কার্ডে ডলার এনডোর্স করা থাকে অথবা আপনার যদি কেউ পরিচিত থাকে ভারতে,  অথবা ভারত বাংলাদেশের সীমান্ত কিছু মানি এক্সচেঞ্জ অফিস থাকে এগুলো সম্পূর্ণ অবৈধ প্রক্রিয়া  তাও প্রয়োজনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারবেন। 

বিদেশে টাকা পাঠানো নিয়ে শেষ কথা

এতক্ষণে আমি  যেই তথ্যগুলো শেয়ার করলাম সেই তথ্যগুলো আমার বিভিন্নভাবে ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করা তথ্য।  তবে সত্য কথা হল এই যে  এই দেশ থেকে বিদেশে আপনি কখনোই বৈধভাবে টাকা পাঠাতে পারবেন না এটা শুরুতেই বলে দিয়েছিলাম। বিদেশে টাকা পাঠানোর সম্পূর্ণ অবৈধ এবং অনৈতিক কাজ। 

Similar Posts

2 Comments

  1. বিদেশ থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশে আসতে পারে অসম্ভব কিছু না,,কিন্তু বাংলাদেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠাতে কেন এতো সীমাবদ্ধতা?,বুঝলাম না বিষয় টা।

    1. এটা প্রত্যেক টা দেশের কেন্দ্রিয় ব্যাংকের নিয়ম। যাতে দেশের টাকা বিদেশে পাচার না হয়ে যায়। বিদেশে টাকা পাঠানো টাকা পাচারের মতন। এতে করে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা হ্রাস পায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *