যে ৬ টি দেশে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া সহজ
কোন দেশে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া সহজ । এবং কিভাবে স্টুডেন্ট ভিসা পাবেন খুব সহজে এটিই আজকে আমাদের আলোচনার মূল উদ্দেশ্য। জানতে হলে সম্পূরন পোষ্ট টি পড়ুন , তাহলে আশা করি বুঝতে পারবেন।
কিভাবে স্টুডেন্ট ভিসা পাবেন খুব সহজে
পড়ালেখা করার উদ্দেশ্যে বিদেশ যাওয়ার জন্য যে ভিসার পারমিশন দেয়া হয় তাকে স্টুডেন্ট ভিসা বলে। স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ মূলত আপনি যে প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে চাচ্ছেন আপনার ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর কোর্সের মেয়াদ যতদিন থাকবে আপনার স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ ও ততদিন । মনে করেন আপনার কোর্সের মেয়াদ চার বছর তাহলে আপনার স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ ও চার বছর । সাথে অতিরিক্ত 90 দিন বেশি দেয়া হবে ।
প্রথমে আপনি যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে চান সে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্বন্ধে ভালোভাবে জেনে নেয়া। এবং নিজেকে ভালোভাবে প্রস্তুত করা, এখানে প্রস্তুত করা বলতে বুঝিয়েছে ভালো ফলাফল অর্জন করা । এবং ওই দেশের সামাজিক অবস্থা সম্বন্ধে ভালো জ্ঞান রাখা , আপনি যেন যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার চাচ্ছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশের সাথে নিজেকে সঠিকভাবে মানিয়ে নিতে পারেন সে যোগ্যতা তৈরি করা।
সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যে লেটার আপনাকে দেয়া হবে সেই লেটার পত্র ভালোভাবে বার বার পড়া । ভালোভাবে জেনে নিতে হবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি এর পরিমান এবং অন্যান্য বিষয় সমূহ ।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে কিছুটা পার্থক্য থাকলেও প্রায় সব নিয়মই একই রকম । আপনার কাঙ্খিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবার পর তাদের প্রেরিত অফার লেটার উল্লেখিত ডেডলাইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে দিতে হবে । এবং নির্দিষ্ট তারিখের আগে আপনাকে ভিসা সংগ্রহ করতে হবে ।
যেকোনো দেশের ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে প্রথমে ওই দেশের ভিসার আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে । এবং সব কিছুই সঠিকভাবে পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ দূতাবাসে জমা দিতে হবে । এবং নির্দিষ্ট তারিখে ইন্টারভিউ এর মাধ্যমে আপনার ভিসা কনফার্ম করতে হবে ।
জানুনঃ
স্টুডেন্ট ভিসার জন্য যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন
ভিসার জন্য আপনার নির্দিষ্ট কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন হবে নিচে সে সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো।
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র , নাম্বার পত্র, এবং প্রশংসা পত্র এর ফটোকপি সত্যায়িত এবং মূল কপি ।
- পাসপোর্ট থাকতে হবে
- পাসপোর্ট এর মেয়াদ কমপক্ষে এক বছর থাকতে হবে , পাসপোর্ট এর সকল তথ্যের সাথে শিক্ষাগত যোগ্যতা কাগজপত্রের মিল থাকতে হবে ।
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির লেটার পত্র
- আর্থিক সামর্থ্যর প্রমাণপত্র
- ছবি সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড এ
- টিউশন ফি’র ব্যাংক ড্রাফট
- ভাষাগত দক্ষতার প্রমাণ পত্র
- এবং পুলিশ ছাড়পত্র ।
আপনার বিরুদ্ধে যদি কোন দেশ ও আইন ও বিরোধী কাজের মামলা থাকে তাহলে আপনি পুলিশ ছাড়পত্র পাবেন না ।
কোন দেশে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া সহজ
কোন দেশের স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া কঠিন না, আবার একেবারে সহজ ও না । যদি আপনার সে যোগ্যতা থাকে তাহলে আপনি যে কোন দেশের স্টুডেন্ট ভিসা পেয়ে যাবেন । তবে মোটামুটি ভাবে বলা যায় যে বাংলাদেশি সাধারণ স্টুডেন্টদের জন্য যে সকল দেশ গুলি পড়াশোনার জন্য ভালো হবে নিচে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলো ।
ভারতে স্টুডেন্ট ভিসা
ভারত আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ । বাংলাদেশের 3 সাইড দিয়েই ভারত অবস্থিত । কিন্তু আমরা চাইলেই যখন তখন যে কোনোভাবে ভারতে যেতে পারি না । ভারতে যেতে হলে আমাদের কিছু প্রসেসিং এর ভিতর দিয়ে যেতে হবে যেমন ভিসার মাধ্যমে । ভারতে কিছু কিছু জায়গায় পড়াশোনার মান অনেক উন্নত যার কারণে বর্তমানে বাংলাদেশের অনেকে স্টুডেন্ট পড়াশোনার জন্য ভারতে যাচ্ছে । অল্প খরচে পড়াশোনার জন্য সবথেকে ভালো উপায় হল ভারতে পড়াশোনা করা ।
কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসা
উচ্চশিক্ষার জন্য কানাডা বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ার শিক্ষার্থীদের জন্য খুব পছন্দের জায়গা । বাংলাদেশ থেকে অনেক স্টুডেন্ট প্রতিবছর কানাডায় যায় উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য । কানাডা দেশটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের একটি দেশ বর্তমানে উন্নত রাষ্ট্র গুলোর ভিতর কানাডা অন্যতম । কানাডার পড়াশোনা মান অনেক ভালো । কানাডা দেশ বর্তমানে এমন একটি দেশ যেখানে রাজনৈতিক – অর্থনৈতিক ও সামাজিক দিক থেকে অনেক এগিয়ে ।
জার্মান এ স্টুডেন্ট ভিসা
ইউরোপের অন্যতম প্রধান শিল্পোন্নত দেশ হল জার্মান । বিশ্বের ধনী দেশগুলোর মধ্যে জার্মান অন্যতম, ইউরোপের মধ্যে শিক্ষাব্যবস্থা এবং অন্যান্য নানা দিক থেকে জার্মান শীর্ষস্থানে । জার্মানি রয়েছে অনেক নামিদামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান / বিশ্ববিদ্যালয় । জার্মান শিক্ষাব্যবস্থার দিক থেকে অনেক এগিয়ে । বাংলাদেশ এবং ইন্ডিয়ান শিক্ষার্থীদের জার্মানি পড়ালেখার জন্য একটা আকর্ষণ রয়েছে ।
এখানে সব থেকে মজার বিষয় হলো শিক্ষার্থীর নিজের নামে সেখানে একটা ব্যাংক একাউন্ট করে ওই জায়গার ১০ হাজার ২৩৬ ইউরো আনুমানিক বাংলাদেশের ১০ লক্ষ টাকা ব্যাংকে জমা দিতে হবে । কারণ যাতে ওই শিক্ষার্থী তার নিজের খরচ মেটাতে পারে । বিস্তারিত সবকিছু জানতে হলে জার্মান দূতাবাস, ঢাকার ওয়েবসাইটে দেখতে পারেন ।
আয়ারল্যান্ড স্টুডেন্ট ভিসা
আয়ারল্যান্ড ছোট একটি দেশ । আয়ারল্যান্ড হলো উত্তর আটলান্টিকের একটি ছোট দ্বীপ । আইল্যান্ডের চারপাশে পানি উথাল পাথাল করে এই দেশে রয়েছে অসংখ্য পাহাড় এবং নদী এই দেশের লোকজন সারা বছরে একনাগাড়ে ৭ দিন সূর্য দেখতে পায়না । আয়ারল্যান্ড বিশ্বের অন্যতম একটি ধনী দেশ ।
আয়ারল্যান্ড দেশটি পড়াশোনার দিক দিয়েও অনেকটা এগিয়ে । তাইতো উচ্চশিক্ষার জন্য বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর আয়ারল্যান্ডে পাড়ি জমাচ্ছে । এমনকি বাংলাদেশের অনেক স্টুডেন্ট বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য অবস্থান করছেন ।
ইতালি স্টুডেন্ট ভিসা
ইতালি দেশটি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য একটি জনপ্রিয় দেশ । বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি ডিগ্রী প্রদানের জন্য অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ইতালিতে । দেশটিতে তুলনামূলকভাবে স্বল্প টিউশন ফি দিয়ে এই দেশে পড়াশোনা করা যায় ।
পশ্চিম ইউরোপের একটি একীভূত প্রজাতান্ত্রিক দেশ ইতালি । ইতালি দেশের মুদ্রার নাম হলো ইউরো । ইতালি স্টুডেন্ট ভিসা পেতে 25 হাজার টাকা থেকে 30 হাজার টাকার মতো খরচ হবে । এবং আপনার একাউন্টে যথেষ্ট পরিমাণে অর্থ থাকতে হবে । যদি আপনার পরিবারের কেউ আগে থেকেই ইতালির অধিবাসী থাকে তাহলে আপনি খুব সহজে ইতালি যেতে পারবেন । আপনার বয়স 21 বছরের বেশি হলে আপনি ইতালি স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন ।
মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসা
বর্তমানে উন্নত রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়া অন্যতম । তিনটি ঐক্যবদ্ধ প্রদেশ এবং 13 টি রাজ্য নিয়ে গঠিত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দেশ মালয়েশিয়া । মালয়েশিয়া দেশের শিক্ষাব্যবস্থার দিক দিয়ে অনেক উন্নত । বর্তমানে বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ান স্টুডেন্ট উচ্চশিক্ষার জন্য মালয়েশিয়া কে বেছে নিচ্ছে । এখানে পড়াশোনার খরচ অনেক কম এবং পড়াশুনা শেষে মালয়েশিয়া সহ ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশে মিলছে চাকরির সুযোগ । মালয়েশিয়ায় আপনি পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট টাইম জব করার সুযোগ পাবেন । তাই বর্তমানে মালয়েশিয়া শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য অনেক পছন্দের জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে ।