জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে কতদিন সময় লাগে

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে কতদিন সময় লাগে এই সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানুন। ভোটার আইডি কার্ডের কোন তথ্যে ভুল হলে পরবর্তীতে এগুলো সংশোধন করতে হয়। অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কতদিন সময় প্রয়োজন এই সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

একজন নাগরিকের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরে পূর্ণাঙ্গ নাগরিক সেবা পাওয়ার জন্য ভোটার আইডি কার্ড খুবই জরুরী। ভোটার আইডি কার্ডে ভুল হলে, উক্ত ভুলগুলো সংশোধন করা না হলে পরবর্তীতে অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হয়।

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে কতদিন সময় লাগে

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে সাধারণত ৭ থেকে ৪৫ দিন সময় প্রয়োজন। সংশোধনের ক্যাটাগরি অনুযায়ী NID সংশোধনের সময় পরিবর্তন হয়।

জাতীয় পরিচয় পত্র তথ্য অনুযায়ী ক্যাটাগরি ভিত্তিক সংশোধনী আবেদন করা হয়। ভোটার আইডি কার্ডের সকল তথ্যগুলোকে মোট ৪টি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা হয়েছে। উক্ত ক্যাটাগরি অনুযায়ী সংশোধনের সময় প্রয়োজন হয়।

ভোটার আইডি কার্ডের সংশোধনের ক্যাটাগরি ও সংশোধনের সময়কাল:

সংশোধনের ক্যাটাগরি কার্যদিবস/সময়কাল
৭ দিন
১৫ দিন
৩০ দিন
৪৫ দিন

 

অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন আবেদন করার পরে প্রথমে আবেদনটি ঢাকায় নির্বাচন কমিশনের হেড অফিসে দায়িত্বরত কর্মকর্তার কাছে চলে যায়। এবং উক্ত কর্মকর্তা আবেদনটি ক্যাটাগরি করে সবশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কাছে প্রেরণ করে।

পরবর্তীতে উক্ত অফিসার আপনার আবেদনটি যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন করে। যদি আপনার তথ্যে গর মিল থাকে সেক্ষেত্রে আপনার আবেদনটি বাতিল হতে পারে।

দ্রুত জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের পদ্ধতি

দ্রুত জাতীয় পরিচয় পত্রের সংশোধন করার জন্য আবেদনের সাথে সংশোধিত তথ্যের গ্রহণযোগ্য প্রমাণপত্র সংযুক্ত করতে হবে। প্রমাণ পত্র গুলো অবশ্যই ক্লিয়ার ও স্পষ্ট হতে হবে। ক্যাটাগরি অনুযায়ী আপনার আবেদনটি ৭ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে অনুমোদন অথবা বাতিল করা হবে।

সংশোধিত তথ্য অনুযায়ী আবেদনের ক্যাটাগরি বিভক্ত হয়। ছোটখাটো আংশিক তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে অনুমোদন অথবা বাতিল হতে পারে। সঠিক তথ্য প্রমাণ করে প্রমাণপত্র আপলোড করলে আবেদন বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই সামান্য।

দেখতে পারেনঃ জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে কি কি লাগে

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের ক্যাটাগরি সমূহ

সাধারণত ৪টি ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন করা হয়। ক্যাটাগরি গুলো হল:

সংশোধনের ক্যাটাগরি সংশোধনের ধরন
নামের আংশিক পরিবর্তন
নামের বানান সংশোধন
বাংলা ও ইংরেজি নাম মিলকরণ
লিঙ্গ পরিবর্তন
বৈবাহিক অবস্থান সংশোধন
৩ বছর পর্যন্ত জন্ম তারিখ সংশোধন
রক্তের গ্রুপ সংশোধন
মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন
ঠিকানা সংশোধন
৫ বছর পর্যন্ত জন্ম তারিখ সংশোধন
স্বাক্ষর, ছবি, আঙ্গুলের ছাপ বা আইরিশ আপডেট
ধর্ম পরিবর্তন
শিক্ষাগত যোগ্যতা পরিবর্তন
স্বামী/ স্ত্রীর নাম সংযোজন ও বিয়োজন
প্রতিবন্ধকতা / অসমর্থতা
শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র অনুযায়ী সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তন
৫ বছরের বেশি জন্ম তারিখ সংশোধন (নির্বাচনে প্রার্থীর সীমা, চাকরীর বয়স সীমা, মুক্তিযোদ্ধা, ভোটার যোগ্যতা, বয়স্কভাতা অর্জনের বসয় সীমা ব্যতীত)
শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র ব্যতীত, অন্যান্য প্রমাণের ভিত্তিতে সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তন
জন্ম তারিখ সংশোধন (সকল ক্ষেত্রে)

 

উপরের টেবিল লক্ষ্য করুন। ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের ক্যাটাগরি এবং কোন ক্যাটাগরিতে কোন ধরনের সংশোধন করতে পারবেন তা বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে।

উক্ত ক্যাটাগরি অনুযায়ী আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র তথা ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে সময় প্রয়োজন হবে।

সাধারণতঃ

  • “ক” ক্যাটাগরির সংশোধনের জন্য ৭ দিন সময় লাগে।
  • “খ” ক্যাটাগরির সংশোধনের জন্য ১৫ দিন সময় লাগে।
  • “গ” ক্যাটাগরির সংশোধনের জন্য ৩০ দিন সময় লাগে।
  • “ঘ” ক্যাটাগরির সংশোধনের জন্য ৪৫ দিন সময় লাগে।

বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি সময়সীমা ব্যতীত সংশ্লিষ্ট উপজেলা অফিসারের কর্মব্যস্ততা অনুযায়ী ২-৫ দিন সময় বেশি প্রয়োজন হতে পারে। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট উপজেলা অফিসারের উপর।

অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার নিয়ম

ইন্টারনেট ব্যবহার করে অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করার জন্য নিচে দেখানো পদ্ধতি অনুসরণ করুন।

  • http://nidw.gov.bd/ অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
  • পূর্বে লগইন করা থাকলে ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনার অ্যাকাউন্ট লগইন করুন। অথবা নতুন করে একাউন্ট রেজিস্টার করুন।
  • নতুন ভাবে রেজিস্টার এর ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার ও জন্ম তারিখ প্রদান করুন।
  • তারপরে আপনার স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানা এনআইডি কার্ড অনুযায়ী সিলেক্ট করুন।
  • মোবাইল নাম্বার প্রদান করে OTP ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ করুন।
  • এরপরে গুগল প্লে স্টোর থেকে NID Wallet অ্যাপস ডাউনলোড করে QR স্ক্যান করুন।
  • NID Wallet অ্যাপসে প্রবেশ করে ফেস ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ করুন।
  • এরপরে প্রোফাইল থেকে “তথ্য সংশোধন” মেনুতে প্রবেশ করুন।
  • পরবর্তীতে এডিট অপশনে ক্লিক করে পুরনো তথ্যগুলো এডিট করে নতুন তথ্য সংযোজন করুন।
  • আবেদন ফি পরিশোধ করুন।
  • প্রমাণপত্র/ ডকুমেন্টস আপলোড করে আবেদনটি সাবমিট করুন।

অনলাইন মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের মাধ্যমে অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফি পরিশোধ করতে পারবেন।

Similar Posts

5 Comments

  1. আমি ২০দিন আগে আমার স্পেলিং ঠিক করার জন্য আবেদন করেছি,এখনো সেটা পেন্ডিং দেখাচ্ছে, সার্পোটিং ডকুমেন্টস হিসেবে আমার একাডেমিক সার্টিফিকেট এড করি,আমি প্রবাসী আছি তাই পাসপোর্ট রি-ইস্যু করা অত্যাবশকীয় এমন স্লো প্রসিজার আমাদের কে অসামান্য ভোগান্তিতে ফেলছে

    1. এমন সমস্যা সচরাচর হয়ে থাকে। আর এই সমস্যার কারণে মানুষ দালালের শরণাপন্ন হয়। আপনার সবকিছু যাচাই-বাছাই করার পরে পেন্ডিং ক্লিয়ারেন্স হয়ে যাবে। সাধারণত নামের বানান ঠিক করতে অনেকটা ভোগান্তি পোহাতে হয় বিশেষ করে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে।

    1. দুঃখিত, আপনার অসুবিধাটির জন্য। এনআইডি বিষয়ক যেকোনো সহায়তার জন্য কল করুন ১০৫

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *