ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে লক্ষ টাকা ইনকাম করার উপায়
ফ্রিল্যান্সিং বা অনলাইন ইনকামের কথা আমরা নিশ্চয়ই সকলে শুনেছি । ফ্রিল্যান্সিং শব্দটা গত কয়েক বছর আগেও আমাদের কাছে খুব অপরিচিত ছিল কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে আমরা এই ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছি । বর্তমানে মানুষ একটু ফ্রিল্যান্সিংয়ের দিকে বেশি ঝুঁকছে কিন্তু সঠিক গাইডলাইন না থাকার কারণে ফ্রিল্যান্সিং জগতে আমরা ভালো কিছু করতে পারছিনা আজকে আমরা ফ্রিল্যান্সিংয়ের কয়েকটি সেক্টর নিয়ে আলোচনা করব যেগুলো থেকে আপনি মাসে লক্ষ টাকার বেশি ইনকাম করতে পারবেন । তাহার আগে চলুন জেনে নেই ফ্রিল্যান্সিং কি? এবং কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারব আমরা ?
এই পোস্টের সার সংক্ষেপ
ফ্রিল্যান্সিং কি
ইন্টারনেট ব্যবহার করে ঘরে বসে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে অন্য কারো কাজ করে দেয়াকে ফ্রিল্যান্সিং বলা হয় । ফ্রিল্যান্সিংকে আমরা মুক্ত পেশা বলতে পারি কারণ এখানে আমার বস আমি নিজেই আমার যখন মন চায় তখন কাজ করতে পারব আমার যখন মন না চায় তখন কাজ করবো না । বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিংয়ের চাহিদা প্রচুর বৃদ্ধি পাচ্ছে । জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে সম পরিমাণে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি না হওয়ায় বেকার জনগোষ্ঠী ফ্রিল্যান্সিং এর দিকে ধাবিত হচ্ছে । এমন কি বর্তমানে মানুষ চাহিদা পূরণের জন্য চাকরির পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করেও টাকা ইনকাম করছে ।
ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন
ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি মোবাইল বা কম্পিউটার এর প্রয়োজন হবে । এবং তাতে ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে । এর পরে যেটা বেশি প্রয়োজনীয় সেটা হল সঠিক গাইডলাইন । আপনি যদি সঠিক ভাবে কাজটা না করতে পারেন তাহলে ক্লায়েন্টরা আপনাকে কাজ দিবে না এবং ফ্রিল্যান্সিং জগতে আপনার উন্নতি হওয়া খুব কষ্টকর হয়ে যাবে ।
তারপরে আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে আপনি কোন সেক্টর নিয়ে ফিল্যান্সিং এ কাজ করতে চান । আপনি যে সেক্টর নিয়ে কাজ করতে চাইবেন সেই সেক্টরে আপনাকে পারদর্শী হতে হবে । ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজে আপনার প্রচুর ধৈর্য এবং বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হবে । এবং আপনার মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান অর্জন করতে হবে ।
ফ্রিল্যান্সিং করে কত টাকা ইনকাম করতে পারবেন
অনেকে হয়তো বলবেন নাকি ফ্রিল্যান্সিং করে আপনি প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন । এই কথাটা ভুল না বর্তমানে আমাদের দেশে অনেক ফ্রিল্যান্সার আছে যারা প্রতিমাসে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে কয়েক লক্ষ টাকা ইনকাম করে থাকেন । তবে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে টাকা ইনকামের জন্য আপনাকে প্রচুর পরিমাণে কষ্ট করতে হবে । আপনি যে সেক্টর নিয়ে কাজ করবেন সেই সেক্টর সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে হবে । আপনি যত ভালোভাবে কাজটা করতে পারবেন এবং যত বড় কাজ করতে পারবেন ততো আপনার বেশি টাকা ইনকাম হবে । ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে আপনি কত টাকা ইনকাম করতে পারবেন সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার কাজের উপর আপনি কেমন কাজ করছেন ।
কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং করবেন ?
ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য অবশ্যই আপনাকে একটি ইন্টারনেট ডিভাইস মোবাইল বা কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে । ফ্রিল্যান্সিং এর ভিতরে অনেক সেক্টর আছে তাঁর ভিতরে থেকে আপনি যেকোনো একটি সেক্টরে পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করে মার্কেটপ্লেসে কাজের জন্য চেষ্টা করতে হবে । এখানে আপনার জ্ঞান এবং দক্ষতা দেখে বায়াররা আপনাকে কাজ দিয়ে যাবে । নিচে আমরা ফ্রিল্যান্সিংয়ের কিছু সেক্টর নিয়ে আলোচনা করব যেগুলোর মাধ্যমে আপনি সম্পূর্ণ দক্ষতা অর্জন করে মনোযোগ দিয়ে কাজ করে মাসে লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন ।
গুরুত্বপূর্ণঃ ফ্রিল্যান্সিং শেখার উপায় 2022
ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি
এর সঠিক জবাব হলো ওয়েবসাইট এন্ড এপ ডেভলপমেন্ট। যারা এই সমস্ত কাজের প্রতি বেশি আগ্রহী তারা চাহিদা সম্পন্ন এইসব কাজ শিখে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে অনেক কাজ পেতে পারেন এবং সেই কাজ করে অনেক টাকা আয় করতে পারেন। এছাড়াও বেশ কয়েকটি কাজ রয়েছে যা বর্তমানে খুব চাহিদা সম্পন্ন তা নিচে দেখানো হলো।
ডিজিটাল মার্কেটিং
আমরা সকলেই জানি যে মার্কেটিং শব্দের অর্থ হলো কোন কোম্পানি বা প্রোডাক্ট এবং অন্য কোন কিছুর প্রচার বা বিজ্ঞাপন করা । ঠিক এই কাজটি যদি অনলাইনের মাধ্যমে দর্শকদেরকে তারগেট করে করা হয় তখন তাকে বলে ডিজিটাল মার্কেটিং । বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এই সেক্টরটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই সেক্টরে কাজ করে অনেক ফ্রিল্যান্সাররা মাসে এক লক্ষ টাকা এর উর্দ্ধে ইনকাম করছে । ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করার জন্য আপনাকে এই বিষয় নিয়ে সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
কনটেন্ট রাইটিং বা ব্লগিং
কনটেন্ট রাইটিং বলতে আমরা বুঝি লেখালেখির কাজ । কন্টেন্ট রাইটিং বা ব্লগিং এর কাজ করার জন্য আপনাকে লেখালেখি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে । আপনি যদি কন্টেন্ট রাইটিং এর উপর এক্সপার্ট হতে পারেন তাহলে এই সেক্টরে আপনি মার্কেটপ্লেসে প্রচুর কাজ পেয়ে যাবেন । এবং আপনি চাইলে নিজে একটি ওয়েবসাইট ক্রিয়েট করে সেই ওয়েবসাইটে লেখালেখি করে গুগোল মনিটাইজ এর মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন । এবং আপনি যদি ভাল একজন কনটেন্ট রাইটার হয়ে থাকেন আপনি বিভিন্ন নিউজ ওয়েবসাইটে লেখালেখির কাজের জন্য চাকরিও পেয়ে যেতে পারে । এখানে আপনাকে বিবেচনা করবে আপনার লেখালেখির দক্ষতার উপর ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও আপলোড
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম বলতে আমরা বুঝি ফেসবুক ইউটিউব ইত্যাদি । আপনারা নিশ্চয়ই জানেন ফেসবুক অথবা ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে টাকা ইনকাম করা যায় । ইউটিউব এবং ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে ইউটিউব চ্যানেল ফেসবুক পেজ মনিটাইজ করে টাকা ইনকাম করা সম্ভব । এগুলো মনিটাইজ করার জন্য অবশ্যই আপনাকে কিছু নিয়মকানুন শর্তাবলী মানতে হবে । এছাড়া আপনি এসকল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এর মাধ্যমে স্পন্সার থেকেও টাকা ইনকাম করতে পারবেন । সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও আপলোড দিয়ে টাকা ইনকাম করার জন্য অবশ্যই আপনাকে নূতন ইউনিক কোন কনটেন্ট আপলোড দিতে হবে যা দর্শকরা পছন্দ করবে । আপনার সেই ভিডিওতে যত ভিউজ বেশি আসবে আপনি তত বেশি টাকা ইনকাম করতে পারবেন ।
গ্রাফিক্স ডিজাইন
প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোন কিছুকে ডিজাইন করাকে গ্রাফিক্স ডিজাইন বলে । বর্তমানে গ্রাফিক্স ডিজাইনারের চাহিদা অনেক এবং এ সেক্টরের মার্কেটপ্লেসে ও অনেক ধরনের কাজ পাওয়া যায় । গ্রাফিক্স ডিজাইন হল কোন একটা কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের লোগো ডিজাইন , টি-শার্ট ডিজাইন , ইউটিউব চ্যানেল ব্যানার বা থামনেল ডিজাইন , কোন ব্যানার ফেস্টুন ডিজাইন, কার্টুন ডিজাইন গ্রাফিক্স ডিজাইন অনেক ধরনের হতে পারে পরিশেষে বলা যায় কম্পিউটার বা মোবাইল ব্যবহার করে কোন কিছুকে ডিজাইন করা কে গ্রাফিক্স ডিজাইন বলে । এই সেক্টর নিয়ে আপনাকে কাজ করতে হলে এই সেক্টরে সম্পূর্ণ দক্ষতা অর্জন করতে হবে ।
ওয়েব এবং অ্যাপস ডেভেলপার
ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যে ওয়েব এবং অ্যাপ ডেভেলপারদের চাহিদা বিপুল । ওয়েব এবং অ্যাপ ডেভেলপারদের কাজ হল একটি ওয়েবসাইট এবং অ্যাপস কে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা । মনে করেন আপনি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার চাচ্ছেন । আপনি যদি ঐ ওয়েবসাইটটিকে কিভাবে সাজিয়ে তুলবেন সেই কাজ না জানেন তাহলে অবশ্যই আপনার একজন ওয়েব ডেভেলপার এর প্রয়োজন হবে যে আপনার ওয়েবসাইট টিকে সম্পূর্ণ ভাবে কাস্টমাইজ করে সাজিয়ে তুলবে । বর্তমান বিশ্বে কম্পানি এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে সাথে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়েবসাইট তৈরি করার প্রয়োজন হচ্ছে আর একটি ওয়েবসাইট বা অ্যাপস কে কাস্টোমাইজ করে সাজিয়ে তোলার জন্য অবশ্যই একজন ওয়েব বা অ্যাপস ডিজাইনার এর প্রয়োজন । তাহলে বুঝা যাচ্ছে বর্তমানে ওয়েব এবং অ্যাপ ডেভেলপারদের চাহিদা কেমন ।
উপরে যে ওই সেক্টর গুলোকে উল্লেখ করা হয়েছে ওই সেক্টর গুলোতে যদি আপনি একজন পারদর্শী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি ফ্রিল্যান্সিংয়ের এই সেক্টরগুলোর মাধ্যমে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন । এছাড়াও অনেক সেক্টর আছে ফ্রিল্যান্সিংয়ের সেগুলোতে কাজের মাধ্যমে আপনি টাকা ইনকাম করতে পারবেন ।